Bill Gates Success Story Bangla

বিংশ শতাব্দির শেষ ভাগের উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিলগেসট একটি কিংবদন্তী নাম। আশির দশকে শুরু করা সেই ছোট পরিশরে ব্যবসাটি আজ পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানের রূপ নিয়েছে। তার উদ্দেশ্য ব্যবসার পাশাপাশি পৃথিবীর মানুষের জীবন-যাত্রার মান ধরন বদলে দিয়েছে ১৯৭৫ সালে জন্ম নেওয়া এই প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি ফোরচুন ম্যাগাজিনের পাঁচ শত সফল প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শীর্ষে ৩০ তম স্থান দখল করেছে। একই সাথে ব্যবসা সাফল্য তাঁকে ৯২ বিলিয়ন ডলার সম্পদ গড়ার মাধ্যমে বিশ্বের সব থেকে ধনী ব্যাক্তি হিসাবে পরিচিতি এনে দিয়েছে।

বিলগেসট ১৯৫৫ সালে ২৮ অক্টোবর ছিয়েটলে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি বিলগেসট নামে সবার কাছে পরিচিত এবং পৃথিবীর অন্যতম একজন প্রভাবশালী প্রযুক্তিবীদ। কম্পিউটার জগতের অন্যান্য উদ্ভাবকদের চেয়ে বিলগেসট শিশু বয়সেই একটু বিশেষ সুবিধা পেয়েছেন। তিনি শৈশবে লেখছাইড স্কুল নামে ছিয়েটলের একটি নামি-দামি প্রতিষ্ঠানে লেখা-পড়ার সুযোগ পেয়েছেন। এই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের তৎকালীন কম্পিউটার এর সাথে পরিচিত হবার সুযোগ দেওয়া হতো বিলগেসট খুব দ্রুত নতুন এই কম্পিউটার এর প্রেমে পরে যান এবং সে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাতে সময় দিতে থাকেন। ১৯৭০ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে পল এলেনের সাথে ব্যবসা শুরু করেন তারা একসাথে রাস্তার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি সফটওয়্যার তৈরি করে ২০ হাজার ডলারে বিক্রি করেন। তার পরে এলেন ও বিলগেসট একটি প্রতিষ্ঠান করবেন বলে ভাবে কিন্তু বিলগেসট এর বাবা-মা বলে স্কুলের গন্দি পার হয়ে কাজটা করতে, তার বাব-মা চেয়েছেন সে একজন আইনজীবী হোক। তাই তাকে হার্ভার্ড কলেজে ভর্তি করেন কিন্তু তার কাছে পড়া লেখা ভালো লাগছিল না ফলে তিনি উচ্চ শিক্ষা থেকে ধিরে ধিরে আগ্রহ হারিয়ে ফেললেন। এর পরে তিনি এলেন এর সাথে M I T S এল্টের কম্পিউটার এর জন্য অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার তৈরি করেন।

১৯৭৫ সালে এলেন এবং গেসট যৌথভাবে মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠা করেন। মাইক্রোসফট শুরুর দিকের যাত্রা খুবই মসৃণ ছিল না কিছু দিন পরে মাইক্রোসফট সবার কাছে জন প্রিয় হতে উঠে। কিন্তু তাদের মধ্যে মাত্র ১০% মানুষ কেবল টাকা দিতো কারন তাদের কাছে চুক্তিবদ্ধ ছিল না। কিন্তু সবার কাছেই প্রিয় একটি সফটওয়্যার হয় এবং যার ফলে অনেকেই তাদের পাওয়া ফ্রি মার্কেট কপিকে নতুন করে তৈরি করে বিনামূল্যে বাজার জাত করেন। বিল এই বিষয় টিতে খুশি ছিলেন না তিনি পরে লাইসেন্স পলিছি নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয় কিন্তু সেই সময় কম্পিউটার প্রেমি মানুষ টাকা দিয়ে সফটওয়্যার গ্রহণ করতে ইচ্ছুক ছিলেন না। তারা বিনামূল্যে সফটওয়্যার পেতে আগ্রহী কেননা, তারা যে কারোর সাথেই শেয়ার করতে পারছে। বিল একটি অন্য ভাবে চেষ্টা করলেন তিনি দেখলেন বিক্রির জন্য সফটওয়্যার তৈরি করে ফ্রি দিলে সেটা চুরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাই তিনি ১৯৭৬ সালে সকল কম্পিউটার ব্যবহার কারিদের কাছে একটি করে চিঠি পাঠায় তাতে লেখা থাকে বিনামূল্যে সফটওয়্যার বিতরন ভালো ভালো নতুন সফটওয়্যার তৈরিতে উৎসাহ কমায়। কেননা এর ফলে ডেভেলপারদের শুধু শুধু সময় অপচয় হয় কিন্তু তার এই চিঠিতে কেউ সারা দেয়নি। এর পরেও তিনি অটল থেকেছেন তিনি নতুন কিছুর মাধ্যমে করতে চাইলেন। M I T S এর প্রেসিডেন্ট রবার্টের সাথে বিল এর মনোমালিন্য সম্পর্ক ছিল এর কারন ছিল সফটওয়্যার ডেভেলপ ও ব্যবসা পরিচালনা করা। ১৯৭৭ সালে রবার্ট তার M I T S অন্য একটি লোকের কাছে বিক্রি করে দেয় গেসট ও এলেন তাদের তৈরি করা প্রতিষ্ঠান ধরে রাখতে নতুন মালিকের বিরুদ্ধে আইনত অভিযোগ করেন। ১৯৭৯ সালে গেসট তার কোম্পানিকে ওয়াসিংটন বেল্ভিউতে স্থানান্তর করে মন দিয়ে কাজ শুরু করেন এবং আপারেশন, প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট, বিজনেস ও মার্কেট সহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই ২০ জন করে তরুন কে নিয়ে কাজ শুরু করেন। অ্যাপল আই বি এম ইন্টেল এর মত কোম্পানি যখন উন্নতির দিকে যাচ্ছে তখন মাইক্রোসফট ও তার সকল সমস্যার সমাধান করছে। এ কাজে তিনি তার মা কেউ মাঝে মাঝে সাথে নিতেন তার মায়ের সাথে বিভিন্ন কোম্পানির ভালো সম্পর্ক ছিলো। এই কারনের জন্যই তিনি আই বি এম এর CEO সাক্ষাৎ পান এবং ১৯৮০ সালে আই বি এম তার ব্যাক্তিগত কোম্পানির জন্য সফটওয়্যার খোঁজ করছিলেন। মাইক্রোসফট এই সময় সুযোগ পেয়ে যায় এবং আই বি এম এর সাথে মিল রেখে একটি সফটওয়্যার কিনে নেয়। তার এই নতুন কেনা সফটওয়্যারে সাথে আই বি এমের খাপ খাওয়াতে চায়। ঠিক ৫০ হাজার ডলারের বিনিময়ে এই কাজটা করেন তিনি এবং অন্য দিকে তার তৈরি সফটওয়্যারে জন্য একই মূল্য পেয়ে থাকেন। আই বি এম সফটওয়্যার সোর্স কোড নিয়ে চায় এবং গেসট এটির জন্য আলাদা আলাদা লাইসেন্স পায়। তার সফটওয়্যারে নাম দেয় MS-DOS ১৯৭৯-১৯৮১ এর ভিতরে মাইক্রোসফট বিপুল প্রচার লাভ করে। সেই থেকে যাত্রা শুরু করে দীর্ঘ ১৭ বার বিশ্বের ধনী হয়।

তিনি বলেন আমি কোন কঠিন কাজ করার জন্য একজন অলস ব্যাক্তিকে খুঁজবো, কারন সে ওই কাজটি করার জন্য একটি সহজ উপায় বের করবে।

নিজেকে কখনোই অন্য কারোর সাথে তুলনা করবে না, যদি করো তাহলে তুমি নিজেকে অপমান করলে।

তোমার কাছে যখন অনেক অনেক টাকা থাকবে তখন তুমি ভুলে যাবে তুমি কে, আর যখন তোমার কাছে টাকা থাকবে না তখন সমস্ত পৃথিবী ভুলে যাবে তুমি কে।

এক পরীক্ষায় আমি কিছু বিষয়ে ফেল করেছিলাম কিন্তু আমার বন্ধু পাস করে যায়, আজ ও মাইক্রোসফটের একজন ইঞ্জিনিয়ার আর আমি মালিক।

আপনি গরিব হয়ে জন্ম নিয়েছেন সেটা আপনার দোষ না, কিন্তু গরিব থেকেই মারা যান সেটা আপনারই দোষ।

সফল ব্যাক্তিরা কখনো বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকে না, তারা একই কাজ ভিবিন্ন ভাবে করে থাকে।

Leave a Comment